কুড়ুয়া পাখির ডাক

অপূর্ব নায়েক
“কুড়ুয়া পাখির ডাক”। মুন্ডাদের জীবন-কাহিনি এই ক্ষীণতনু উপন্যাসের উপজীব্য। নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের গরিব বঞ্চিত লখাই পদ্মজবা ফুলমণি ফুলি মঙ্গল সরস্বতী রামদাস শীতল বুধন চরিত্ররা সততা সংস্কৃতি আলো অন্ধকার নিয়ে উঠে এসেছে। বুধন স্বতন্ত্র একটি চরিত্র, প্রতিবাদী। এদের ভালোবাসা সহজ। যৌনতা সরল। লখাই-সরস্বতীর না-ভূমিষ্ঠ সন্তান জীবনের কী বিচিত্র নিয়মে বাবা হিসেবে পেতে চলেছে মঙ্গলকে। আদিবাসীদের রীতি-নীতি পরবের বিবরণ সুন্দর ভাবে এসেছে। নগেন সাঁপুই বড়োলোক। অনেক জমির মালিক। সে কাজ দেয় মুন্ডাদের। এমন চরিত্র সাধারণত অত্যাচারী শোষক হয়। কিন্তু মানুষটা সৎ। আর একজন ভালো মানুষ উমানাথ। বাড়িভাড়া এবং খাওয়ার খরচ না-নিয়ে উমানাথ মাস্টার শুভঙ্করকে থাকতে দিয়েছে। শুভঙ্কর কাহিনির সবচেয়ে দামি চরিত্র। যদি মুন্ডা সমাজের মানুষগুলো সলতে আর তেল হয়, বুধন তাহলে প্রদীপ। শুভঙ্কর সেই প্রদীপে আগুন জ্বেলে আলো ছড়ানোর কাজটা করে দিয়েছে। পঞ্চায়েত মেম্বার নিশিকান্ত সাহা এবং তার ভাই নিখিল খলচরিত্র। তাদের মিথ্যাচারিতার নষ্টামির শোষণের শিকার মুন্ডারা। বুধনের নেতৃত্বে মুন্ডারা জেগে উঠেছে। দাবি জানাতে শিখেছে। ফলে নিশিকান্তর লোকেদের হাতে বুধন আক্রান্ত হয়েছে। নিশিকান্ত না-বুঝে আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে। মুন্ডারা তীর ধনুক টাঙ্গি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। ‘যাদের গন্তব্য নিশিকান্ত সাহার বাড়ি।’
উপন্যাসটির সমাপ্তি ছোটোগল্পের মতো। দারুণ ইতিবাচক ইঙ্গিত তৃপ্তিকর প্রশান্তি দেয়। ভাষা ঝরঝরে। সংলাপ বিশ্বাসযোগ্য।
চমৎকার প্রচ্ছদ, কাহিনির সঙ্গে মানানসই। লেটারিং-এ শিল্পের ছোঁয়া আছে। কাগজ বাইন্ডিং প্রিন্ট সুন্দর।
কুড়ুয়া পাখির ডাক – গৌতম বিশ্বাস।
প্রচ্ছদ – সুদীপ্ত জানা
বহুবচন প্রকাশনী।
মূল্য – ১৫০