সালটা ২০০৪। অক্টোবর মাসে মনিপুরের ৩২ বছরের মনোরমা থাংজুনের বিবস্ত্র মৃতদেহ মিলল আসাম রাইফেলসের শিবিরের কাছে রাস্তার ধারে এক জঙ্গলে। তাঁকে আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানেরা তার তিন দিন আগে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। মা, ভাইয়ের চোখের সামনে দিয়ে। মৃতদেহের স্তনে ক্ষত ও যোনি বন্দুকের গুলিতে ক্ষতবিক্ষত। তিনি সমাজকর্মী হিসাবে পরিচিত ছিলেন, ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পড়াতেন, বিদ্যালয়ে পাঠাতেন, খেলা করাতেন, শেখাতেন। তবে তাঁর বদগুণ ছিল, কোন অন্যায় হছে দেখলে, শুনলে বা জানলে প্রতিবাদে সোচ্চার হতেন। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, “দেশকে নিরন্তর পীড়ন হইতে বাঁচাইবার জন্য এক দল লোকের তো বুকের পাটা থাকা চাই, অন্যায়কে তারা প্রাণপণে প্রমাণ করিবে, পুনঃপুনঃ ঘোষণা করিবে।"(‘কর্তার ইচ্ছায় কর্ম’)। অপরাধীদের শাস্তি হয়েছিল কি? জানা যায়নি। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সামরিক, আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানেরা বাড়তি সুযোগ পেয়ে থাকেন। কর্তব্যরত অবস্থায় তাঁরা ফৌজদারি অপরাধ করলেও সাধারণ আদালতে তাঁদের বিচার হবে না যদি কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মতি না মেলে। সেনাদের বিভাগীয় বিচারের ব্যবস্থা আছে বটে, কিন্তু তাতে অভিযোগকারীর আমজনতার অংশ গ্রহণ সামান্য। ডাক পেলে তিনি নিজে হাজির হতে পারবেন, আইনজীবী কিংবা অন্য কোন বন্ধুর সহায়তা নিতে পারবেন না। চলতি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নাগাল্যান্ডের মন জেলার কয়লা শ্রমিকরা ফিরছিলেন একটা ছোট গাড়িতে হপ্তান্তে বাড়িতে। এমনটাই তাঁরা ফেরেন প্রত্যেক হপ্তায়। আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানেরা সামনে থেকে গাড়িতে গুলি চালিয়ে দশ জনকে মেরে ফেললেন। খবর পেয়ে ছুটে আসা ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের ছয় জনকেও প্রাণ দিতে হলো। নাগাল্যান্ডের পুলিশের তদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বিবৃতিতে অমিল দেখা গেল। বারে বারে কেন্দ্রীয় সরকার অপরাধী সেনাদের পাশে থেকেছে। না হ’লে নাকি তাদের মনোবল নষ্ট হয়ে যাবে। সেনা বাহিনীর জওয়ানেরা দেশ রক্ষার জন্য অনেক কষ্ট স্বীকার করেন, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের সীমান্তে পাহারা দিতে হয়। কিন্তু সাধারণ নাগরিক কেন তাঁদের বেখেয়ালের শিকার হবেন? সরকার বিরোধীরা ২০০৪ সালেও সোচ্চার হয়েছিলেন, ২০২১ সালেও হয়েছেন। সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন(আফস্পা নামে যা আখ্যাত) বাতিলের আবার দাবি তুলছেন। শুধু কেন্দ্রীয় সরকারে ও বিরোধী দলে রঙের পরিবর্তন হয়েছে। মনমোহন সিং তাঁর মেয়ের এক বই প্রকাশনী অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছিলেন যে কোন রাজনৈতিক দলের স্বরূপ বোঝা যায় না যখন তারা বিরোধী পক্ষে থাকে। মনমোহন সিং তখন ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। Read More
Category : ত্রিপুরা
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে পেশ হতে চলা প্রস্তাবিত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ তথা ব্যাঙ্কিং আইন (সংশোধন) বিলের বিরোধিতায় আগামী ১৬ এবং ১৭ই ডিসেম্বর ব্যাঙ্ক আধিকারিক এবং কর্মী সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়নস এর নেতৃত্বে সারা দেশ ব্যাপী ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের আহ্বান করা হয়েছে। কর্পোরেট চালিত মিডিয়া এই ধর্মঘটকে যথারীতি ‘কর্মনাশা ধর্মঘট’ আখ্যা দিয়ে শিরোনাম সংবাদ করবে-“ব্যাঙ্ক ধর্মঘটে নাকাল সাধারণ মানুষ" অথবা “ টানা দুদিন ব্যাঙ্ক বন্ধ, গ্রাহকের ভোগান্তি"। আর তা দেখে জনমানসের একাংশে এই ধারণা প্রসূত হবে যে, এই ধর্মঘটের কোনো যৌক্তিক ভিত্তি নেই, ব্যাঙ্ক কর্মচারীরা তাদের নিজেদের স্বার্থে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এ ধারণা সর্বৈব ভাবে ভ্রান্ত এবং ভিত্তিহীন। এ লড়াই শুধু ব্যাঙ্ক বাঁচানোর লড়াই নয়, Read More
উত্তর পূর্বাঞ্চলের জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে বাঙালি পরিচয় সবচেয়ে শক্তিশালী অনুঘটক
উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৮ টি রাজ্যে প্রায় আড়াইশো জনজাতির বাস। তাদের মধ্যে প্রায় ৩০ টি জাতি নিজেদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার সাব্যস্ত করার জন্য সংগ্রাম করছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি আবার সশস্ত্র আন্দোলন করে। তাদের দাবী-দাওয়াগুলো প্রায় একইরকম।ভূমি অধিকার, রাজনৈতিক আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার, ভাষিক এবং সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা রক্ষার অধিকার ইত্যাদি। কিন্তু এইRead More
কোভিডের প্রেক্ষাপটে, তৃণমূল থেকে নীতি নির্ধারক; সমাজের নানা স্তরের, নানা জীবিকার লড়াকু নারীদের দুর্দান্ত নেতৃত্বের গল্পগুলো উঠে আসছে চারিদিক থেকেই।Read More
অধিকার আন্দোলনের আপোষহীন যোদ্ধা, আদিবাসী মানুষদের অকৃত্রিম বন্ধু, প্রান্তজনের স্বার্থরক্ষায় সতত সরব জেসুইট পাদ্রী ফাদার স্ট্যান স্বামী Read More
ভূস্বামী রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের দিকে এগোচ্ছে ত্রিপুরা। বামেদের লালমাটির মিথ ভেঙে যাওয়ার পর গত তিন সাড়ে তিন বছরে বামেরা এক আউন্স শক্তির সঞ্চয় করতে পারেনি বরং খুইয়েছেRead More