আবদুস সালামের কবিতা

মা
নিরব অভিমান পিষে পিষে মশলা বানায় রোজ
অধিকারের হাঁড়িতে রান্না হয় নিঃশব্দ অন্ধকার
যন্ত্রণা আর বিষাদগুলো ঘুরঘুর করে সারাদিন
উল্লাসের বাজপাখি ছোঁ মেরে তুলে নিচ্ছে সব সুখ
চলেছে বিবেকের লাশ বয়ে সভ্যতার বক
নড়বড়ে সেতু দিয়ে পার হয় হাঁটাহাঁটির গল্প
ভাঙ্গা নৌকায় দাঁড় টানে সফলতার ঘাটে
দ্বান্দ্বিক চাঁদ ঝলসে দেয় মফস্বল সংসার
পুরুষ বিশ্বাস সেবনে উপশম হয় নৈতিক বিলাস
খুলে যায় বিবর্ণ দুয়ার
মৃত শবের উপর ভনভন করে মাছি
বসবাসের ঠিকানায় গড়ে ওঠে সভ্যতার কবরস্থান
প্রহসন
করোনা মাখানো দীর্ঘশ্বাস গুনছে প্রহর শব্দহীন যাতনা গুলো ধূপের মতো জ্বলে বৃষ্টির সময় চুমু খায় বিপন্ন বিশ্বাস
শব্দের আলনায় টাঙ্গিয়ে রাখি স্বপ্ন রক্তাক্ত বিবেক জীবনের পিঠে চড়ে
আত্মক্ষরণের পুকুরে সেরে নিই স্নান
সময়ের শৃগাল শোনায় অন্ধকারের ভাষণ
খসে যায় পলেস্তারা
বসবাসের ঠিকানায় সভ্যতার দাফন হয় ভাবের ঘরে রুদালীরা সাজায় কান্নার প্রহসন
মৃত শবের উপর ভন ভন করছে মাছি প্রহর গুনে প্রত্যাশার বক
আশ্বাস গুলো ঢেউয়ে ঢেউয়ে হয় মাতোয়ারা
পাথরের ভগবান বসে আছে প্রার্থনার ঘরে
বিশ্বাসের চাতালে মাথা ঠুঁকি রোজ
সিঁদুরে চোখে পুরোহিত ছিটিয়ে দিচ্ছে শান্তিজল
রূপকথার পাতালপুরীতে তলিয়ে যাচ্ছে বৈভবের নিয়মকানুন
অসময়
তীরে বসে গুনছি প্রহর
গাইছি বেলা শেষের গান
ফুলেরা সব ঝরে গেছে
ফুরিয়ে গেছে দখিনা হাওয়ার প্রাণ
ফুল পাখিরা গাইছে এখন ঝরা পাতার গান
বেলা শেষের করুন রোদ
মুখে এঁকেছে আল্পনা
উঠোন জুড়ে দেয় পাহারা দেয়
জীবন মৃত্যুর ছানা
সব যুদ্ধ থেমে গেছে ফিরে চলো ডেরায়
থামুক বন্দুকের কলরব
সন্ধ্যা নামছে পাড়াজুড়ে মৌনকঙ্কালের উৎসব
আশংকা যত মৌন অন্তরে
নদী দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে
মৃত্যু দূত হানা দেয় জাগরণের ধারে
নদী তখন অজান্তেই মাটির গান ধরে
আরোগ্য হীন অন্ধ পৃথিবীর ইতিহাস
একটা দেশের সব ঘৃণার মুখ এই দিকে
ঘৃণার উপসংহার টানতে টানতে লেলিয়ে দিচ্ছে মৃত্যুদ্যূত
কবরের আঙিনায় চেয়ে আছে শূন্যতা
অশ্লীল ঈগলনখ আঁচড়ে দিচ্ছে দেশের আত্মা
বিশ্বাসের নৌকা চলেঅবিশ্বাসের নদীতে
হাবুডুবু খায় নিম্নবর্গীয় মানুষ
রাত গভীর হলে ঈশ্বরেরা পাড়ায় আসে
বিষন্ন দিন,বিপন্ন হয় মা বোনদের সম্ভ্রম
বিষন্ন রাত নেমে আসে পাড়ায়
সীমাহীন বাধা নিয়ে সূচক বাড়ে বিচ্ছিন্নতার
নিস্তেজ শূন্যতা নিয়ে কবরখানার কবিতা লিখি
ভুলে যায় শৈশবের গল্প
ভুলে যায় ঝঞ্ঝা বিধ্বস্ত মায়ের মুখ
ঘুমের ভিতর দুঃস্বপ্নের চলে আনাগোনা
ধর্ষিত হয় সংবিধানের প্রতিটি অনুচ্ছেদ বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে
ঈশ্বর ও জানতে চাই বংশ ঠিকুজি
কুলুঙ্গি হাঁতড়ে আনতে বলে বাসস্থানের দলিল
চেনা মুখগুলো ডেকে উঠছে হুক্কাহুয়া সুরে
সুরক্ষা বাহিনী পাহারা দেয় সীমানা বদলের রাস্তা