তৈমুর খানের কবিতা

তৈমুর খানের কবিতা
কাঙাল গ্রীষ্ম
তালপাতার পাখা দাও
আজ বাতাস নেই, রুক্ষ গ্রীষ্মকাল
টুকরো টুকরো ছায়ায় আমাদের নষ্ট বিশ্রাম
অপেক্ষায় আছে
ঝড় উঠবে,
ঝড়ে উড়বে গোধূলির গান
মেহগনি পাতারা ছোঁড়ে মর্মর কাঁপন
ঠাণ্ডা জল, একটু এদিকে এসো
কী সুন্দর গ্লাস !
তৃষ্ণা আজ কিছুতেই কথা শোনে না
ডাকছে, ডাকছে তোমাকে
তুমি বসন্তের নতুন কিশোরী হও !
বর্ষারঞ্জিনী
ছোট্ট বাড়ি, মা হলুদ বেটে দেয়
আমরা নিমপাতা চিবিয়ে দেখি
তেঁতুল গাছের বক ওড়ে
উঠোনে ছায়া পড়ে হাসে
রোজ দেখি মেঘদূত যায়
আমাদের ছেঁড়া বর্ণ পরিচয়
প্রতিটি সকাল চেনে,
বিদ্যাসাগর এসে দেখে যান
পাঠশালা বসে গাছের ছায়ায়
মেঘদূত, বৃষ্টি হবে না আজ ?
বাবা নেই , মা শুধু কাঁদে
আঁচল ভিজে যায় মায়ের কান্নায় !
যুগান্তরের পথ
তোমার কুয়ো থেকে দুঃখ তুলে নিচ্ছি
আমার ভাবনার রশি দীর্ঘ ঝুলে নামছে
কুয়োর পাতালে
একাকী লণ্ঠন জ্বেলে আকাশরঞ্জিনী পতঙ্গদের ডাকছি
ডানা পুড়িয়ে যাক তারা
মৃত্যুর কি ভাষা আছে ?
ভাষাহীন মরে যাওয়াগুলি আমার সন্তান
নিষিদ্ধ প্রান্তরে তাদের কবর দিই আমি
আর মধ্যরাতে কবর থেকে তুলে তাদের প্রাণ ফিরিয়ে দিই
বাঁচা – মরার ভেতর দিয়েই যুগান্তরের পথ
দাঁড়ি – কমাবিহীন বয়ে যেতে থাকে অনিঃশেষ