ইকতিজা আহসানের কবিতা

পৃথিবীর জ্বর! অনেক জ্বরতপ্ত সে…. অনেক জ্বর নিয়ে তার ভেতরের সকল সবুজ কাঁপছে!
জ্বর
পৃথিবীর জ্বর!
অনেক জ্বরতপ্ত সে….
অনেক জ্বর নিয়ে তার ভেতরের সকল সবুজ কাঁপছে!
নদী, সমুদ্র, পাহাড়, উপত্যকায় কুয়াশালীন সকল উদ্ভিদ
জ্বরের ভাষায় কথা কইছে পরষ্পর!
সকল বর্ণমালা, সকল অক্ষর দিয়ে বোনা তার সমূহ বাক্য অনেক উষ্ণ; গরম -ভাবাপন্ন শরীরে ঘুম নাই
তার আঙুল বর্ধিষ্ণু তাপমাত্রার মুদ্রায় রান্না করে তবু দৈনন্দিন আনাজ, দৈনন্দিন জীবন
হে আকাশলীনা মেঘ,অদৃশ্য জল সম্ভার, আমাকেও তোমার ভেতর লীন করে নাও
মেঘের ভেতরে ছদ্মবেশ নিয়ে
দূর দূর মেঘের দেশ থেকে অধিক ঠাণ্ডা জলের সমাবেশ ঘটিয়ে
তারপর হে ছদ্মবেশী আমি-মেঘ তুমি পৃথিবীর মাথায় রাতজেগে জলপট্টি দাও
অনেক ঠাণ্ডা প্রয়োজন আজ পৃথিবীর
অনেক শুশ্রূষাময় ঠাণ্ডায় পৃথিবীর জ্বর নেমে যাবে
বাড়ি ফেরা
প্রশান্তির দিকে যাচ্ছি
থানকুনি পাতার মতো সে থরেবিথরে ফুঁটে আছে!
মায়ের স্নেহের মতো ভাঁটফুল
অথবা ভাঁটফুলের মতো মায়ের স্নেহ দিয়ে গোসল সেড়ে
ভুলে যাব পথের ধকলসমুহ
ধোঁয়া ওঠা গরম ভাতের আদর সাজিয়ে সোনালু ফুলের মতো বোন চঞ্চল
বহুদিন পর ভাইকে কাছে পেয়েছে সে
সমুদ্রের ঢেউয়ের অগ্রে থেকে থেকে
ভাইয়ের কাছে আবদার খুলে বসবে এখন
কখনও ভাইয়ের খুনসুটিতে ঠোঁট ফুলিয়ে উড়ে
অন্য ডালে বসবে অভিমানী প্রজাপতি!
উড়ুক উড়ুক
আমি তার ডানার দিকে মুচকি হেসে চেয়ে থাকবো…
দেবদারুর ছায়ার মতো অগ্রজ উঁকি দিয়ে বলবে
গোঁফদাড়ির জংগল বানিয়েছিস পুনরায়
তখন নিম্নমুখী আমি
আমার হতাশার দিকে তাকিয়ে থাকবো
গলায় ঝুলে থাকা ডিপ্রেশনের মালাটি ক্রুর হেসে আমাকে চিমটি কাটবে
আমি আমার শৈশবের পুকুরপাড়, জামতলার হাতছানী দেখতে পাব
সেসব ছাপিয়ে ঘরভরতি আমার আব্বার কণ্ঠস্বর গমগম করে উঠবে
আমি ছাড়া কেউ আর সে কণ্ঠস্বর শুনতে পাবে না
আমি জানি কোথাও তাঁকে আর খুঁজে পাব না!
মায়ের আঁচলের আড়ালে আশ্রয় খুঁজবো
আমার চোখের জলে সে আঁচল ভিজে উঠে
সেখান থেকে থানকুনি পাতার ঘ্রাণ এসে আমার নাসারন্ধ্র ভরিয়ে দিবে
আর ছড়িয়ে পরতে থাকবে থোক থোক প্রশান্তি…