বাঙালি অষ্টোত্তর শতনাম

মীর রাকেশ রৌশান
যে জাতি তার ভাষা, সংস্কৃতি,ইতিহাস ভুলে যায় সে জাতির ক্রমে অস্তিত্ব শেষ হয়ে যায়।যদিও জাতি এবং জাতীয়তাবাদ নিয়ে প্রচুর তর্কবিতর্ক থাকতেই পারে কিন্তু এটাও চিরন্তন সত্য জাতি থাকলে জাতীয়তাবাদ থাকে।তবে তা যেনো উগ্র না হয়।বাঙালি জাতি তার বাইরে নয়।বাংলা ও বাঙালির কথা আসলেই ক্রমে লালন শাঁই, চৈতন্যদেব,রামমোহন,বিদ্যাসাগর ,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,নজরুল ইসলামের কথা মনে আসে।যাঁরা গোটা বিশ্বের কাছে আমাদের অস্তিত্বের জানান দিয়েছেন। এতোবড় একটা জাতি আর অসংখ্য গুণীজনের নিরন্তর প্রচেষ্টায় আমাদের সত্ত্বা টিকে আছে।আর সেই সব মানুষের গান,কবিতা,শিল্প,বিজ্ঞান, সাহিত্য পড়ে আমাদের বেড়ে ওঠা।আমরা যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বললেই মনের মধ্যে ভেসে আসে সাদা দাড়ি এবং বড় কোট বা পাঞ্জাবি পরা একটি মানুষের অববয়ব কিন্তু যদি ধরুন আমি আব্বাসউদ্দীনের নাম বলি সঙ্গে সঙ্গে তাঁর গানের লাইনের কথা মনে পড়ে, অজান্তেই আনমনে গুণগুণ করি কিন্তু তাঁর ছবি আমাদের চোখে ভেসে আসে না।এমন অসংখ্য বিখ্যাত বাঙালিকে আমরা ভুলে গেছি।আর ভুল যাওয়ার দায়ী আমরাই এটাও পুরোপুরি বলা যায়না কারণ আধুনিক ভারতরাষ্ট্রে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর উপর আঘাত আসছে।বহুত্ববাদী ধারার উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে একদেশ,এক আইন,এক ভাষার মত তত্ত্ব।হিন্দু-হিন্দি-হিন্দুস্থান করার চেষ্টা চলছে।অনেক ক্ষেত্রে আমরা সেটা মেনেও নিচ্ছি,সেক্ষেত্রে সে দায় আমাদের।ওই যে আগেই বলেছি, যে জাতি তার ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষাকে ভুলে যায় ক্রমেই সেই জাতির অস্তিত্ব শেষ হয়ে যায়। আর এই জায়গায় ভাবিয়ে তুলেছে শিল্পী শুভেন্দু সরকার।জ্যোর্তিময় ভট্টাচার্যের উপস্থাপনায় বিড়লা আকাদেমি অব আর্ট এন্ড কালচারে শিল্পী শুভেন্দু সরকার করতে চলেছেন ” বাঙালি অষ্টোত্তর শতনাম”।অর্থাৎ তাঁর চোখে একশো আট জন এমন মানুষ যাঁরা গোটা বিশ্বের বুকে বাংলা ও বাঙালিকে চিনিয়াছেন এমন ব্যক্তিত্বের ক্যারিকেচার শিল্প।যেখানে থাকবে সদ্য প্রয়াত সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় থেকে চৈতন্য দেবের জীবনচরিত।শিল্পী শুভেন্দু সরকারের ক্যারিকেচার আমরা ওয়ার্ডটুন পেজে এবং সোসাল মিডিয়ার বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাই।তাঁর নানা ক্যারিকেচার এ ফুটে ওঠে শিল্পী, সাহিত্য, রাজনীতি, প্রতিবাদ থেকে বাংলা ও বাঙালি যাপনের চালচিত্র।নিঃসন্দেহে ‘বাঙালি অষ্টোত্তর শতনাম ‘ এই মুহুর্তের একটি ব্যতিক্রমী শো,আগামী ১২ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত চলবে।