প্রেক্ষাপট ছাত্র আন্দোলন

শীর্ষ
সচরাচরই যেকোনো স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের সামনের সারির স্থান ছাত্রদের দখল করতে দেখা যায় l সে কথোপকথনের শুরু হোক , অথবা ব্যারিকেড ভেঙ্গে এগিয়ে যাওয়া, আমলাতন্ত্রের বিরোধীতাই হোক কিংবা রাজনৈতিক সত্তা পরিবর্তনের অভিমুখ সৃষ্টিতে ছাত্রদের ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে l
কলেজ ছাত্র জীবনের শুরু থেকেই ছাত্রদের এই বৈশিষ্ট্য আমাকে আকৃষ্ট করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে যখনই কোন আন্দোলনের অংশীদার হয়েছি তখনই বারবার প্রশ্ন উঠেছে মনে এই প্রবল উৎসাহ আর মন্ডল এর উৎস কি?অধ্যাপক এবং প্রবীনদের মতে বারবারই উত্তর পেয়েছি যে অভিজ্ঞতার অভাব ছাত্রদের এই নৈরাজ্যবাদী মানসিকতার মূল কারণl মনে পাল্টা প্রশ্ন জেগেছে প্রথম কথা, ছাত্ররা কি সত্যিই নৈরাজ্যবাদী?
দ্বিতীয়তঃ অভিজ্ঞতার অভাবের কারণ হলে আজকের দেশ স্বাধীন হতে পারতো না। বিভিন্ন রাজ্যে নানা ক্ষমতার বদলে প্রেক্ষাপট তৈরিতে ছাত্রদের ভূমিকাকে এতটাও গুরুত্ব দেওয়া হতো না। তথাকথিত একাডেমিক ইন্টেলিজেন্টশেয়ার মতে তোদের প্রতিষ্ঠানবিরোধী তার বৈশিষ্ট্যকে কারণ বলে মনে করা হয়েছে তাদের বিভিন্ন স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের অংশীদার হওয়ার। তবে আমার তাতেও মতবিরোধ রয়েছে। প্রথমত বলতে চাই, ছাত্র এই কমিউনিটি , কখনোই একটি স্থায়ী কমিউনিটি বলে স্বীকার্য হতে পারে না। আজকে যে ছাত্র কালকে সে অন্য কোনো পেশাদার, কোন আমলা অথবা কোনো একটি সিস্টেমের অঙ্গ। ছাত্রদের নির্দিষ্ট কোন কমিউনিটিতে ফেলা ছাত্রদের মূল প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার কারণ বলে আমি মনে করি। যে কোনো রকম বাইনারিতে কোনো ছাত্রই থাকতে পারে না। তাকে আপনি যতটাই ক্লাসিফাইড করার চেষ্টা করবেন সে ততটাই অন্য কোন রূপ ধারণ করার চেষ্টা করবে এবং এটাই ছাত্র দের আল্টিমেট বৈশিষ্ট্য বলে আমি মনে করি।
অন্তত আমার অভিজ্ঞতা তাই বলে। যেকোনো প্রতিষ্ঠানই একটি যেহেতু একটি মেশিনের মত কাজ করে তাই তাকে ক্লাসিফাইড করতেই হয় তাকে যে কোনো কাউকেই একটি বাইনারিতে ফেলতেই হয় l তবে বারংবার এই বাইনারির মধ্যে আটকে গেলে ছাত্রসমাজের নিজস্বতা নষ্ট হয়, ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ হয়। ছাত্র সমাজের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য বলে আরেকটি জিনিসকে আমি মনে করি সেটি হল তারা ব্যক্তি স্বাধীনতা বিষয়ে অন্য কোনো কমিউনিটির থেকে বিশেষভাবে আগ্রহী এবং সচেতন। এই আগ্রহ এবং সচেতনতা কিছুটা হলেও তাদের রাজনৈতিক এক্টিভিজমের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়, তাদের স্বতঃস্ফূর্ত এই চরিত্র যে কোনো রাজনৈতিক দলই সহজে কাজে লাগাতে পারে এবং তার একটি কারণ হতে পারে অভিজ্ঞতার অভাব l

একজন ছাত্র হিসাবে আমি যতদিন আছি ততদিন আমি বিশ্বাস করে যাব যে কোনো রকম বাইনারি অথবা ক্লাসিফিকেশনের মধ্যে না থাকার l নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ অথবা রাজনৈতিক দলের হয়ে অন্ধভাবে প্রচার বা লড়াই করা ছাত্র বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। ছাত্ররা বদল চায়। তাদের বদল করার ক্ষমতা আছে। নিজেদের স্বতঃস্ফূর্ততা বজায় রেখে ছাত্র বৈশিষ্ট্যের কথা মাথায় রেখে তাদের সবসময় উচিত রাজনীতির উর্ধ্বে গিয়ে অ্যাক্টিভিজিম কে গুরুত্ব দেওয়া এবং ক্ষমতার পেছনে না ছুটে, যে কোন আন্দোলনের স্বতঃস্ফূর্ততা বজায় রাখা।
শীর্ষ,আইন বিভাগ, ফাকাল্টি অফ ল ,ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি