মানস মণ্ডলের কবিতা

মুহূর্তটা
আমি সেই মুহূর্তটা
যাকে উষাপর্ব বলে ভুল করে লোকে
সূর্যও করে
ইশারার কয়েকটুকরো তুলে নিয়ে
সকালের কোলে মাথা রেখে
বিকেলের গায়ে হেলান দেওয়া বুকে করে
মুহূর্তটা পাশ ফেরে
পৃথিবী ডেকেছে
পৃথিবীর হাঁটা ব্যাপারে একটা চমৎকার আছে
ওলট-পালট আছে
একটা নতুন
সন্ধ্যা আর আকাশের দোলাচলের মাঝে
একটুকরো আবার এসো
মাঝে মাঝে ফিরে আসে
দাঁড়ায় একটু
সুধাদির পুরনো চাঁদের জানলায়
সাবিত্রি মান্ডির গল্প
পিছিয়ে পিছিয়ে যাই
গ্রন্থের হলুদপথ খুলে খুলে খুঁজি
টই টই দুপুরের হারানো ঠিকানা
ভূতে ভরা মাঠের পুকুর
ছড়ানো গল্পের ডালে অলস বিকেল
ঝুঁকে থাকা কাঁচামিঠে
মধুকুলি আমের বাগান
সাঁতরে সাঁতরে আসা ঈশানি নদীর ঢেউ
ছুঁয়ে যায়
সাবিত্রী মান্ডির গল্প
বিকেল রঙের কাঁচা কুঁড়ে ঘরে
দু’মাসের আলগা সংসার
জল তোলে, ভাত রাঁধে
খুঁটে খুঁটে তুলে আনে
ঝড়ে ভাঙা মাঠের শৈশব ।
বিপর্যয়
অসম্ভব আলো নিয়ে নতুন এসেছে
আপনাকে কিছু খোলামেলা বেড়ে দিই
ততক্ষণে বিকেল রঙের গল্পগুলো
ঘরের সমস্ত সাদাকালো কোণে
ছড়িয়ে পড়েছে
একটু পরেই
নিটোল একটা ঝিরি ঝিরি এসে যাবে।
তার পরেও আপনি থাকলেন না
আপনার চলে যাওয়াটা মাঝখানে রেখে
কিছুই ঘটেনি হতে গিয়ে
দু’ দণ্ডের ছুটি থেকে যায়
গোপন পৃথিবী
তিথি বার দিনক্ষণ লেখা।
সাঁকোর জন্য দু’ ফোঁটা
কত কত লেখা পুজোর বাজার থেকে
বের হয়ে কেউ শুয়ে, কেউ বসে
কেউ দাবা খেলে তো কয়েকজন মিলে
ক্রিকেট পেটায়
সীমানা উপরে কেউ সাধের ভূগোল
মুছে দিতে চায় তো
কেউ আকাশ বানিয়ে মেঘ-ঝড়, বজ্রপাত
দু’ হাতে সামলে বাঁশি বাজাব বাজাব ভাব আনে
কোন লেখা জলজ্যান্ত সূত্র ধরে
এক মুঠো অহংকার লিখে
গুমোট আড্ডায় ছেড়ে আসার দক্ষতা মাপে
আর সেই বংলা ব্যান্ড লেখা, নতুন কাপড়-জামা পড়ে
প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘোরে…
প্রকাশিত থেকে অনেকটা দূর
আমার কয়েক পাতা এ’পার- ও’পার
সাঁকোটির আঁচলে দু’ ফোঁটা
ঝরায় রোদ্দুর।
মানস মণ্ডল : জন্ম-৬০এর দশকের প্রথম দিকে। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার খাটুন্দী গ্রামে। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই লেখালেখি শুরু। দেশ পত্রিকা থেকে শুরু করে পশ্চিম বঙ্গের প্রায় সমস্ত উল্লেখযোগ্য পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়। অনুপম নীরবতা এবং মৌরীফুলের চিঠি নামে দুটি কাব্যগ্রন্থ আছে।