দেউচা-পাচামিতে প্রতিনিধিদল;আদিবাসী মহিলারা পুলিশের নিপীড়নের বিরুদ্ধে চরম ক্ষুব্ধ

জয়তু দেশমুখ
২৫ জানুয়ারী কয়েকটি সংগঠনের পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধিদল দেউচা পাচামী সংলগ্ন এলাকায় যায়। আন্দোলনকারী আদিবাসীদের সাথে সাক্ষাৎ করে। দেওয়ানগঞ্জ, হরিনসিঙা প্রভৃতি গ্রাম থেকে আসা উপস্থিত আদিবাসীরা জোরের সাথে জানায় জমি জীবিকা পরিবেশ ধ্বংসকারী কয়লা খনি চাই না। জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে তথাকথিত “সম্মতি”-র প্রশ্নে তাঁরা বলেন যে এ বিষয়ে সরকার প্রশাসন সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করছে। কিছু সামাজিক নেতার মাধ্যমে মিথ্যা কথা বলে সই করিয়ে বড় ধরণের প্রতারণা চালাচ্ছে সরকার এখানকার অধিকাংশ নিরক্ষর মানুষদের সাথে। তাঁরা আরও বলেন, আমরা নিজেদের জমি চাষ করে জীবনধারণ করবো। জমি হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হতে চাই না। তাই কয়লা খনি চাই না। এই এলাকায় চাষাবাদ হয় না বলে একটা মিথ্যা প্রচার করা হয়ে থাকে। তাহলে আমরা বেঁচে আছি কি করে? এখানে অনেক জমিতে বছরে দু’বার চাষ হয়।
যে আদিবাসী মহিলাদের উপর তৃণমূল বাহিনী ও পুলিশ হামলা করেছিলো তাঁরা বলেন, হামলার জবাব আমরা আন্দোলনের মাধ্যমেই দেবো। আদিবাসীদের সাথে প্রতারণা করা নেতা শাসকদলে যোগ দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করল, আর এখন আমাদের বাড়িতে পুলিশকে সাথে নিয়ে এসে দুঃখ প্রকাশ করছে! কিন্তু এই অত্যাচারের ক্ষমা নেই। ২৩ ডিসেম্বর পুলিশের লাঠির ঘায়ে গর্ভের সন্তানকে হারিয়েছেন একজন আদিবাসী মহিলা। আদিবাসী বলেই কি এটা আমাদের মুখ বুজে মেনে নিতে হবে? আদিবাসী জীবনের কি দাম নেই? পুলিশের এই লাঠির আঘাত কেন আদিবাসী নিপীড়ন নিবারণ আইনের আওতায় পড়বে না? কেন আদিবাসীরা সুবিচার পাবে না?

গত ৩ জানুয়ারি কলকাতা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্প এলাকার যে মানুষেরা যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের একজনের ওপর হামলা নেমেছে। এই আদিবাসী মহিলার জমি জবরদখল করতে চাইছে শাসকদলের মদতপুষ্ট ক্ষমতাশালীরা। বাধা দিতে গেলে তাঁকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। এই ঘটনার বিরুদ্ধেও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপস্থিত মহিলারা।
উপস্থিত আদিবাসীরা জানায় এই এলাকার ১০ টি মৌজার ১৪ টি গ্রামের আদিবাসী জনগণ জমি রক্ষার জন্য সংগঠিত হচ্ছেন, প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন জয় কিষাণ আন্দোলনের অভীক সাহা, ইয়ং বেঙ্গলের প্রসেনজিৎ বসু, সিপিআইএমএল লিবারেশনের মলয় তেওয়ারি, এআইকেএম-এর জয়তু দেশমুখ, উৎনৌ সংগঠনের কুনাল দেব, কালধ্বনি পত্রিকার প্রশান্ত চ্যাটার্জী, উৎপল বসু, এআইসিসিটিইউ’র পক্ষ থেকে সুরিন্দর সিং প্রমুখ।
জয়তু দেশমুখ : রাজনৈতিক কর্মী।
