এই ‘নিজের মেয়েকে’ই কি চেয়েছে বাংলা?

অঙ্কিতা চক্রবর্তী
মনে পড়ে ‘হীরক রাজার দেশে’ -র সেই বিখ্যাত সংলাপ? “লেখা-পড়া করে যে, অনাহারে মরে সে” কিংবা, “যায় যদি যাক প্রাণ, হীরকের রাজা ভগবান”?
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসক দলের অবস্থা যেন তারই প্রতিধ্বনি। গত ১৮ই অক্টোবর থেকে আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছিলো টেট উত্তীর্ণরা। প্রায় ৮৪ ঘন্টার ঐ অহিংস আন্দোলনকে রুখতে রাজ্য সরকারের বর্বর পুলিশের সময় লাগলো মাত্র ১৫ মিনিট! তার মধ্যেই নির্মমভাবে মারধোর করে টেনে হিঁচড়ে আন্দোলনকারীদের প্রিজন ভ্যানে তুলে থানায় নিয়ে গেল পুলিশ এবং সেখানেও চলল নির্যাতন
পুলিশের বক্তব্য, বৃহস্পতিবার গভীর রাত্রে হাইকোর্টের নির্দেশেই নাকি এমন পাশবিক আচরণ করেছে তারা। তাহলে জেনে নেওয়া যাক কি ছিল হাইকোর্টের নির্দেশ?
প্রথমত, বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট জানায়, ১৪৪ ধারা মেনে চলতে হবে আন্দোলনকারীদের। আন্দোলনকারীরাও সেই আদেশকে মান্য করেই বিচ্ছিন্নভাবে ৪ জনের দলে ভাগ হয়ে ধর্ণায় বসেছিলেন।
দ্বিতীয়ত, বিধাননগর পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যাতে পুলিশ দিয়ে পর্ষদ অফিসে কর্মীদের প্রবেশ ও বেরোনোর ব্যবস্থা করা হয়। খোদ বিচারপতির কথায়, পর্ষদের কর্মীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করুক পুলিশ। এই তবে পুলিশের ব্যবস্থা করার নমুনা?
এই ছিল আদালতের আদেশ যাকে ঢাল করে মধ্যরাত্রে আন্দোলনকারীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। প্রায় রাত্রি ১২টা ২০ মিনিট নাগাদ শুরু হয় দলদাস গুন্ডারূপী পুলিশের এমন বর্বর অত্যাচার। নির্মমভাবে আন্দোলনকারীদের মারতে মারতে টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তুলে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় নিউটাউন থানায়। বাদ যায়নি মহিলারাও! অবশ্য এই অনশনকারীদের গনতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করার আগে পুলিশ রাস্তা ফাঁকা করার জন্য সময় দিয়েছিল ‘কয়েক মিনিট’!
ইতিমধ্যেই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি ন্যায্য আন্দোলনকে সমর্থন করেন। তাহলে পশ্চিমবঙ্গের এই প্রতারিত যোগ্য চাকুরীপ্রার্থীদের আন্দোলন কি তাঁর এতটাই অন্যায্য মনে হলো? নাকি ভয় পেলেন তিনি?
অঙ্কিতা চক্রবর্তী, ছাত্রী, লেখক, রাজনৈতিক কর্মী
1 Comments
আদালতের নির্দেশ ছিল জানলাম পর্ষদের কর্মীদের আসা যাওয়ার ব্যবস্থা করার। মধ্যরাতে পুলিশ লাগিয়ে আন্দোলন কারীদের উপর আক্রমণ চালানোর নির্দেশ আদালত দিতে পারে না। দেয়ও নি আদালতের আদেশ অমান্য করেছে বিধান নগর কমিশনারেটের পুলিশ। তাই আদালতের সুয়ো মটো কেস করার দাবি জানানো হোক।