জাতীয় বাংলা সম্মেলনের তরফ থেকে জয় বাংলা ক্যান্টিন

সিদ্ধব্রত দাস :- লকডাউন, এই শব্দটির সাথে কম বেশি আমরা সবাই এখন পরিচিত। এবং এই শব্দটির সাথে যেটা ওতোপ্রোত ভাবে জড়িত সেটা হল প্রান্তিক মানুষের বিপর্যয়, দিন আনে দিন খায় মানুষের সর্বনাশ। যখন এক শ্রেণীর কাছে লকডাউন তাদের ব্যস্ত জীবন থেকে সাময়িক বিশ্রাম মাত্র, ঠিক তখনই অন্য এক শ্রেণীর কাছে লকডাউন মানে খালি পেটে ঘুমোতে যাওয়া।
এই পরিস্থিতিতে আমরা জাতীয় বাংলা সম্মেলনের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নিই কমিউনিটি কিচেন চালু করব। মানুষের ইচ্ছায় যার নামকরণ হয় ‘জয় বাংলা ক্যান্টিন’। ঘটনাচক্রে আমাদের কাছে খবর আসে এক গেস্ট হাউসে লকডাউনের কারণে বেশ কিছুদিন যাবৎ কোনো অতিথি নেই, তারা তাদের কর্মচারীদের মাইনে দিতে পারছে না। আমাদের কাছে প্রথম চিন্তার বিষয় হয় কী করা যায় যাতে এই পরিস্থিতিতে কর্মচারীদের মাইনের ব্যবস্থা করে গেস্ট হাউস ও কর্মচারীদের পরিবার দুটোই রক্ষা করতে পারি। সবাই মিলে প্রস্তাব করা হয় যে কমিউনিটি কিচেন এই সমস্যার সবচেয়ে ভালো সমাধান। এতে যেমন একদিকে আমরা অসংখ্য মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে পারব, অন্যদিকে গেস্ট হাউসের কর্মচারীদের কর্মসংস্থানও করতে পারব। “জয় বাংলা ক্যান্টিন”, যেটি শুরু হয় মাসে ৫০০০ মানুষের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে খাবার ব্যবস্থা করার জন্য, এক মাসের মধ্যে ৫ জায়গায় তা আমরা চালু করেছি এবং প্রথম মাসে ১৫০০০ মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করতে পেরেছি। প্রতিদিন ২০০ জনের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে খাবার লক্ষমাত্রা নিয়ে শুরু করা প্রচেষ্টা আজ ১০০০ জনের খাবারের ব্যবস্থা করছে।
একজন প্রান্তিক মানুষের কাছে লকডাউনটা এক মুমূর্ষু রুগীর অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ার সমতুল্য। যদি সময়ে সাহায্য না পৌঁছয় সে অচিরেই মারা যাবে। এই কমিউনিটি কিচেনের মাধ্যমে আমরা সমাজকে এই বার্তা দিতে চেয়েছি, সমস্যা যত ভয়ানকই হোক, আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের সমাধান বের করতে পারবো। হয়তো ৫টা কমিউনিটি কিচেন এই লড়াই জেতার জন্য খুব সামান্য, কিন্তু আজ জয় বাংলা ক্যান্টিন অনেককে এটা বোঝাতে পেরেছে এই লড়াই অসম্ভব না।