এক অচেনা গ্রাম কিভাবে ‘কার্পেট গ্রাম’ হয়ে উঠলো

এক অচেনা গ্রাম কিভাবে ‘কার্পেট গ্রাম’ হয়ে উঠলো
পূর্বাঞ্চল নিউজ ডেস্কঃ কার্পেট শিল্পের জন্য পশ্চিমবঙ্গের বারাণসী নামে এক সময় প্রসিদ্ধ ছিল, উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম ১০ নম্বর মালগাঁও গ্রাম। উন্নত মানের কার্পেট তৈরির জন্য মালগাঁও গ্রামের নাম সবার কাছে আজ “কার্পেট গ্রাম “নামেই পরিচিত। জানা যায় একসময় নাকি এই গ্রামে কোন কাজ না থাকায় গ্রামের মানুষ গ্রাম ছেড়ে দূর দেশে পাড়ি দিতো। কিন্তু হঠাৎ প্রত্যন্ত একটি গ্রাম আজ “কার্পেট নগরী ” নামে খ্যাত। শুধু দেশে নয় আজ বিদেশেও পারি দিচ্ছে মালগাঁও এর শিল্পীদের হাতের তৈরি কার্পেট।জানা যায় উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ থেকে ১০ কি.মি দক্ষিণে কুনোর এবং কুনোর থেকে ৪ কি.মি দূরত্বে সংখ্যালঘু বর্ধিষ্ণু গ্রাম মালগাঁও অবস্থিত। জানা যায় মালগাও এ কার্পেটের জনক হলেন আবু তাহের।আবু তাহের বলেন ১৯৭৮ সালে তিনি প্রথম মালগাঁও থেকে কাজের সন্ধানে বেনারসের “ভাদোহীতে” গিয়ে কার্পেট তৈরির কাজ শেখেন।শীতকালে যেমন শরীর আচ্ছাদনের জন্য শৌখিন কাশ্মীরী শাল(কাশ্মীরের শাল পৃথিবী বিখ্যাত) এর ব্যবহার হয়। কার্পেট তৈরির কাজ শেখার সাথে সাথে কার্পেটের যাবতীয় তথ্য তিনি রপ্ত করে তার গ্রাম মালগাঁও এ ফিরে আসেন। মালগাঁও এসে তিনি প্রথম ছোটো ছোটো ছেলেদের নিজ হাত ধরে ধরে কাজ শেখানো শুরু করেন। ১৯৮৫-১৯৮৬ সাল থেকে মালগাও এর ছোটো ছোটো ছেলেদের নিয়ে কার্পেট বানানোর কাজ শুরু করে দেয়। ধীরে ধীরে তা মালগাঁও এ প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। মালগাঁও গ্রামের নাম সবার কাছে কার্পেট গ্রাম নামে খ্যাত হয়ে যায়। প্রথম থেকেই কার্পেট তৈরির কাঁচা মাল বেনারস থেকে আবু তাহের নিয়ে এসে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে লকডাউন এর ফলে এখানকার কার্পেট শিল্প চরম সংকটের মুখোমুখি। শিল্পীরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে এখানে এই শিল্পের জন্য পরিকাঠামো গঠনের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করলেও এখনো পর্যন্ত এখানে সেইভাবে পরিকাঠামো গড়ে উঠেনি ফলে তাদের উৎপাদিত কার্পেট আজ বিক্রি করতে প্রচণ্ড সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।